Bhu-Prishte Somoy Gonona | satyakipathshala

সমাজ বিজ্ঞান (দ্বিতীয় ভাগ) সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক । প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ, অসম সরকার


ভূ-পৃষ্ঠে সময় গণনা। ভূগোল বিজ্ঞান খন্ডের প্রাককথন।

ভূ-পৃষ্ঠে সময় গণনা - পাঠ - ১


Bhu-Prishte Somoy Gonona: এই আর্টিকল এর মাধ্যমে আমি আজ আপনাদেরকে অসম সরকারের, সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবই থেকে প্রথম পাঠ - ভূ-পৃষ্ঠে সময় গণনা থেকে সব প্রশ্নের উত্তর লিখে দেব। যেহেতু  আপনারা সবাই অবগত যে এই সব বইগুলোর কোনো নোট বই না থাকায় অনেক সময় ছাত্র-ছাত্রীদের, যেকোনো প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুঁজতে অনেক অসুবিধে হয়। 

তাই আমি যতটুকু সম্ভব, এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে সে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ আরও সহজ করে তোলার জন্য চেষ্টা করবো। তাঁরা যাতে ঘরে বসে তাদের পাঠ সম্পর্কিত সকল উত্তর পেয়ে যায় তাই আমার লক্ষ্য। তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক আমাদের আজকের আর্টিকেল। 

এই আর্টিকেল এ আপনারা যা জানতে পারবেন তা হলো নিম্নলিখিত:

  • অক্ষাংশ কাকে বলে এবং অক্ষাংশ কীভাবে নির্ণয় করে। 
  • দ্রাঘিমাংশ কাকে বলে এবং দ্রাঘিমাংশ কীভাবে নির্ণয় করে।
  • স্থানীয় সময় সম্পর্কে ধারণা। 
  • দ্রাঘিমাংশের ভিত্তিতে স্থানীয় সময় গণনার কৌশল। 
  • মান সময় সম্পর্কে ধারণা। 

প্রশ্ন: কীসের সাহায্যে পৃথিবীর উপরিভাগের কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা যায় ?

উত্তর: অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার সাহায্যে পৃথিবীর উপরিভাগের কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা যায়। অক্ষরেখার মান বা জোখকে অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমারেখার মান বা জোখকে দ্রাঘিমাংশ বলে। 

অক্ষাংশ কাকে বলে এবং অক্ষাংশ কীভাবে নির্ণয় করে

প্রশ্ন: কৌণিক দূরত্ব কাকে বলে ?

উত্তর: কোনো গোলাকার অবয়বের উপরিভাগের দুটো জায়গায় সেই জিনিসটির কেন্দ্রে সৃষ্ট কোণের মানকে জায়গা দুটোর মাঝের কৌণিক দূরত্ব বলা হয়। পৃথিবীর উপরিভাগের কোনো একটি জায়গায় বিষুবের সঙ্গে কেন্দ্রে সৃষ্ট কোণের মানকে জায়গাটির কৌণিক দূরত্ব বলে। এই কৌণিক দূরত্বই জায়গাটির অক্ষাংশ।

প্রশ্ন: অক্ষরেখা কাকে বলে ?

উত্তর: অক্ষাংশের উপর ভিত্তি করে বিষুবরেখার সমান্তরাল দুটো মেরুর দিকে কল্পিত বৃত্তাকার রেখাগুলোই হলো অক্ষরেখা।

NOTE: সমতল পৃষ্ঠের কোনো দুটো জায়গার অবস্থান নির্ণয়ে মিটার, সেন্টিমিটার ইত্যাদি মাপের একক ব্যবহার করা হয়। গোলাকার অবয়বের কৌণিক দূরত্বের মান বোঝাতে ডিগ্রির একক ব্যবহার করা হয়। 

দ্রাঘিমাংশ কাকে বলে এবং দ্রাঘিমাংশ কীভাবে নির্ণয় করে

বিষুবরেখাকে অক্ষাংশ নির্ণয়ের ভিত্তি হিসেবে নিয়ে গ্রিনউইচ মান মন্দিরের উপরে কল্পিত দ্রাঘিমারেখাকে প্রাথমিক দ্রাঘিমারেখা হিসেবে ধরে দ্রাঘিমাংশ নির্ণয় করা হয়েছে।

বিষুবরেখা ও মুখ্য দ্রাঘিমারেখায় কাটাকাটি করা বিন্দু থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত কল্পনা করা রেখার সাথে বিষুবরেখার অন্য এক নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে কেন্দ্র সংযুগী রেখাটির কেন্দ্রে সৃষ্টি করা কোণের মানই হলো উক্ত স্থানের দ্রাঘিমাংশ।

দ্রাঘিমাংশ: 0° দ্রাঘিমাংশের পূর্ব ও পশ্চিমে বিষুবরেখার উপরে যে কোনো স্থানের কৌণিক দূরত্ব হচ্ছে স্থানটির দ্রাঘিমাংশ। পৃথিবীর পরিধির কৌণিক মাপ হচ্ছে ৩৬০°, এই ৩৬০° অতিক্রম করতে পৃথিবীর সময় লাগে ২৪ ঘন্টা। 

Bhu-Prishte Somoy Gonona

দ্রাঘিমারেখা: প্রতিটি দ্রাঘিমাংশের ওপরের দুই মেরু সংযোগ করে কল্পনা করা রেখাগুলো হচ্ছে দ্রাঘিমারেখা। মোট ৩৬০ টি দ্রাঘিমারেখা পৃথিবীর ওপর কল্পনা করা হয়েছে। 

প্রশ্ন: স্থানীয় সময় বলতে কি বোঝো ?

উত্তর: পৃথিবীর উপরিভাগের সময় গণনা করা হয় মধ্যাহ্ন সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে। কোনো একটি জায়গার মধ্যাহ্ন সূর্যের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে যে সময় গণনা করা হয় সেটি হচ্ছে জায়গাটির স্থানীয় সময় (Local Time). পৃথক পৃথক দ্রাঘিমারেখাতে অবস্থিত জায়গার স্থানীয় সময় পৃথক হয়। 

প্রশ্ন: গ্রিনউইচ মান সময় বলতে কি বোঝো ?

প্রাথমিক দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে গ্রিনউইচ মান সময় (Greenwich Mean Time)বলে। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার স্থানীয় সময় নির্ধারণ করার জন্য প্রাথমিক দ্রাঘিমারেখার মান সময়কে ভিত্তি হিসেবে নেওয়া হয়। 

প্রশ্ন: মান সময় (Standard Time) বলতে কি বোঝো ?

উত্তর: দ্রাঘিমারেখার ভিত্তিতে যে সময় গণনা করা হয় সেটাই হচ্ছে দেশের মান সময়। যে দ্রাঘিমারেখাকে মান সময় গণনার জন্য ব্যবহার করা হয় তাকে মান দ্রাঘিমারেখা (Standard Meridian) বলে। 

প্রশ্ন: ভারতবর্ষের মান দ্রাঘিমারেখা কোথায় অবস্থিত ?

উত্তর: ভারতবর্ষের এলাহাবাদ শহরের পাশ দিয়ে যাওয়া পূর্ব দ্রাঘিমারেখাই হচ্ছে সমগ্র দেশের মান দ্রাঘিমারেখা। এই দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে ভারতীয় মান সময় (Indian Standard Time) বলা হয়। 

প্রশ্ন: নাবিক ও বৈমানিকরা কিসের সাহায্যে স্থানীয় মান জানতে পারে ?

উত্তর: নাবিক ও বৈমানিকরা ক্রনোমিটার (Chronometer) এর সাহায্যে পৃথিবীর যে কোনো স্থানের সময় ও গ্রিনউইচ মান সময় জানতে পারে। সেক্সট্যান্ট (Sextants) যন্ত্রের সাহায্যে জাহাজ উপনীত হওয়া জায়গার স্থানীয় সময় নির্ণয় করা যায়। আজকাল জি.পি.এস. (Global Positioning System) নামে ছোট একটি যন্ত্রের সাহায্যে পৃথিবীর যে কোনো জায়গার অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ ও সমুদ্র-পৃষ্ট থেকে জায়গাটির উচ্চতা নির্ণয় করা যাচ্ছে।

প্রশ্ন: পূর্ব মধ্যাহ্ন ও উত্তর মধ্যাহ্ন বলতে কি বোঝো ?

উত্তর: ১২ টা থেকে পরদিন ১২ টা পর্যন্ত সময়কে পূর্ব মধ্যাহ্ন (Anti-Meridian A.M.) বলে। আবার দুপুর ১২ টা থেকে তার ১২ টা পর্যন্ত সময়কে উত্তর মধ্যাহ্ন (Post Meridian P.M.) বলে। 

Some Important Points to Remember:

  • পৃথিবীর আহ্নিক গতির ফলে পূর্বদিকের জায়গাগুলো প্রথমেই সূর্যের মুখোমুখি হয়। 
  • গ্রিনউইচের তুলনায় কোনো জায়গার যদি আগে দুপুর হয় তাহলে বুঝতে হবে জায়গাটি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে আর দেরিতে হলে পশ্চিম দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। 
  • দুটো জায়গার স্থানীয় সময় জানা থাকলে জায়গা দুটোর দূরত্ব বের করা যায়। 
  • কোনো একটি জায়গার বিষুবরেখার সঙ্গে পৃথিবীর কেন্দ্রে উৎপন্ন কোনের মান বা জোখই হলো সেই জায়গার অক্ষাংশ। 
  • অক্ষাংশের উপর ভিত্তি করে বিষুবের সমান্তরাল কল্পিত বৃত্তাকার রেখাকে অক্ষরেখা বলে। 
  • বিষুবরেখার উপর প্রাথমিক দ্রাঘিমারেখা থেকে কোনো স্থানের কৌণিক দূরত্ব হচ্ছে স্থানটির দ্রাঘিমাংশ। 
  • প্রতিটি দ্রাঘিমাংশের উপর দিয়ে মেরু সংযোগ করে কল্পনা করা রেখাগুলোই দ্রাঘিমারেখা। 
  • প্রাথমিক দ্রাঘিমাংশের স্থানীয় সময় গ্রিনউইচ মান সময়।
  • মান সময় গণনা করা দ্রাঘিমারেখাকেই মান দ্রাঘিমারেখা বলে। 

উপসংহার

তাহলে আজকের আর্টিকেল এখানেই সমাপ্ত করলাম। আপনাদের এই আর্টিকেল কেমন লাগলো কমেন্ট করে বলবেন। আশা করছি আপনারা কিছু প্রশ্নের উত্তর পেতে সক্ষম হয়েছেন। এইভাবে আরও প্রশ্নের উত্তর পেতে এই ব্লগটাকে ফলো করবেন। আপনারা এই ব্লগ কে বুকমার্ক করে রেখে দিন। আবার আসছি নতুন প্রশ্ন ও উত্তরের সহিত। 
Previous Post Next Post

Contact Form